জীবনে চলার পথে, ব্যবসায় উন্নতি করতে, অথবা নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে, সঠিক দিকনির্দেশনা এবং কৌশল জানাটা খুবই জরুরি। আমি নিজে যখন প্রথম ব্যবসা শুরু করি, তখন বুঝতেই পারছিলাম না কোথা থেকে শুরু করব। একজন অভিজ্ঞ মেন্টর থাকলে হয়তো অনেক ভুল এড়ানো যেত। Business coaching ঠিক সেই কাজটিই করে থাকে – একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি আপনার পাশে থেকে সঠিক পরামর্শ দিয়ে আপনাকে সাফল্যের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। বর্তমানের দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে, Business coaching শেখা তাই সময়ের দাবি।আসুন, এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
বর্তমান চাকরির বাজারে টিকে থাকতে নতুন দক্ষতা অর্জন
নিজের দুর্বলতা চিহ্নিত করা

নিজেকে ভালো করে না জানলে, নিজের দুর্বলতাগুলো না বুঝলে, Business coaching করে কোনো লাভ নেই। শুরুতে, আমি একটা তালিকা তৈরি করি, যেখানে আমার দুর্বল দিকগুলো লিখেছিলাম। সত্যি বলতে, প্রথমে নিজের ভুলগুলো স্বীকার করতে একটু খারাপ লাগছিল, কিন্তু এটা ছিল প্রথম পদক্ষেপ।
সঠিক পথে এগিয়ে যাওয়া
এরপর, আমি ভাবলাম কোন পথে গেলে এই দুর্বলতাগুলোকে শক্তিতে পরিণত করা যায়। দেখলাম, আমার communication skills-এ একটু সমস্যা আছে। মানুষের সাথে কথা বলতে গিয়ে গুছিয়ে বলতে পারিনা। তখন আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে public speaking-এর ওপর একটা কোর্স করব।
সময়ের সঠিক ব্যবহার
জীবনে সফল হতে গেলে সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে জানতে হয়। আমি অনেক সময় দেখেছি, দিনের শেষে মনে হয় যেন কিছুই করা হয়নি। আসলে, আমরা সময়টাকে ঠিকমতো ভাগ করি না। একটা to-do list বানালে অনেকটা সুবিধা হয়।
কাজের তালিকা তৈরি
To-do list-এ আমি দিনের কাজগুলো লিখে রাখি, আর সেগুলোকে priority অনুযায়ী সাজাই। যেমন, জরুরি কাজগুলো আগে করি, আর যেগুলো একটু কম জরুরি, সেগুলো পরে করলেও চলে।
সময় নষ্ট করা বন্ধ করুন
আরেকটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে, সেটা হল সময় নষ্ট করা বন্ধ করা। আমরা অনেকেই social media-তে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দিই, বা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে অনেক সময় নষ্ট করি। এগুলো একটু control করতে পারলে, দিনের শেষে অনেক বেশি সময় পাওয়া যায়।বর্তমান বিশ্বে কর্মজীবনের চাহিদা এবং সুযোগ
নতুন চাকরির সুযোগ
বর্তমানে চাকরির বাজারে competition খুব বেড়ে গেছে। আগে একটা ভালো ডিগ্রি থাকলেই চাকরি পাওয়া যেত, কিন্তু এখন শুধু ডিগ্রি থাকলেই হয় না, skills-ও থাকতে হয়। Data analysis, digital marketing, content creation-এর মতো অনেক নতুন ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে, যেখানে কাজের সুযোগ আছে।
প্রযুক্তির ব্যবহার
Technology আমাদের জীবনযাত্রাকে অনেক সহজ করে দিয়েছে, কিন্তু এর কিছু খারাপ দিকও আছে। অনেক কাজ automated হয়ে যাওয়ার কারণে, কিছু traditional চাকরি কমে যাচ্ছে। তবে, এর পাশাপাশি নতুন কাজের সুযোগও তৈরি হচ্ছে।
নিজেকে প্রস্তুত করুন
নিজেকে প্রস্তুত করতে হলে, continuous learning-এর কোনো বিকল্প নেই। নতুন skills শিখতে হবে, নিজের knowledge base বাড়াতে হবে, এবং industry trends-এর সাথে update থাকতে হবে।নিজের ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি
মার্কেট রিসার্চ
ব্যবসা শুরু করার আগে মার্কেট রিসার্চ করা খুব জরুরি। আপনি যে পণ্য বা পরিষেবা বিক্রি করতে চান, তার চাহিদা কেমন, কারা আপনার target audience, আপনার competitor কারা – এই সব কিছু জানতে হবে। আমি যখন প্রথম একটি অনলাইন apparel store শুরু করার কথা ভাবি, তখন আমি দেখেছি যে বাজারে অনেক competitor আছে, কিন্তু organic cotton clothing-এর চাহিদা বাড়ছে।
সঠিক পরিকল্পনা
মার্কেট রিসার্চ করার পর, একটি business plan তৈরি করতে হবে। Business plan-এ আপনার ব্যবসার লক্ষ্য, কৌশল, marketing plan, financial projection ইত্যাদি বিস্তারিতভাবে লেখা থাকবে।
ঝুঁকি মূল্যায়ন
সব ব্যবসায় কিছু না কিছু ঝুঁকি থাকে। তাই ব্যবসা শুরু করার আগে ঝুঁকিগুলো মূল্যায়ন করতে হবে এবং সেগুলো মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
| বিষয় | বর্ণনা |
|---|---|
| মার্কেট রিসার্চ | আপনার ব্যবসার জন্য বাজারের চাহিদা এবং প্রতিযোগিতা মূল্যায়ন করুন। |
| বিজনেস প্ল্যান | একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা তৈরি করুন যাতে আপনার ব্যবসার লক্ষ্য এবং কৌশল অন্তর্ভুক্ত থাকে। |
| ঝুঁকি মূল্যায়ন | সম্ভাব্য ঝুঁকি চিহ্নিত করুন এবং সেগুলো মোকাবিলার পরিকল্পনা করুন। |
যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধির উপায়
কথা বলার চর্চা
যোগাযোগ দক্ষতা বাড়ানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হল বেশি করে কথা বলা। সেটা বন্ধুদের সঙ্গে হোক, পরিবারের সঙ্গে হোক বা সহকর্মীদের সঙ্গে। আমি আগে অনেকের সঙ্গে কথা বলতে লজ্জা পেতাম, ভয় লাগত। মনে হত, যদি ভুল কিছু বলে ফেলি!
কিন্তু धीरे-धीरे বুঝলাম, ভুল না করলে শেখা যায় না।
মানুষের কথা মন দিয়ে শোনা
ভালো communicator হতে গেলে ভালো শ্রোতা হওয়াটাও জরুরি। যখন কেউ কথা বলছে, তখন মন দিয়ে শুনুন। তার কথার মধ্যে কী message আছে, সেটা বোঝার চেষ্টা করুন। শুধু নিজের কথা বলার জন্য ব্যস্ত থাকবেন না।
ইতিবাচক মনোভাব রাখা
ইতিবাচক মনোভাব communication-এর একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যখন আপনি positive থাকেন, তখন আপনার body language-এও সেটা ফুটে ওঠে।নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল
নিজের আবেগ সনাক্ত করা
প্রথমত, নিজের আবেগগুলোকে চিনতে শিখুন। রাগ, দুঃখ, ভয় – এই আবেগগুলো কেন আসছে, সেটা বোঝার চেষ্টা করুন।
শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম
যখন খুব বেশি tension হচ্ছে, তখন কয়েকটা deep breath নিলে অনেকটা calm লাগে। আমি নিজে এটা try করে দেখেছি, খুব কাজে দেয়।
সময় বের করে বিশ্রাম

দিনের শেষে একটু সময় বের করে নিজের জন্য কিছু করুন। গান শুনুন, বই পড়ুন বা simple relaxation techniques follow করুন।সমস্যা সমাধানের নতুন উপায়
সমস্যার সংজ্ঞা নির্ধারণ
যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে হলে, প্রথমে সমস্যাটা কী, সেটা define করতে হবে। সমস্যাটা যদি ঠিকমতো বোঝা না যায়, তাহলে সমাধান করা কঠিন।
বিকল্প সমাধান খোঁজা
একটা সমস্যার অনেকগুলো সমাধান থাকতে পারে। তাই শুধু একটা সমাধানের ওপর নির্ভর না করে, আরও কয়েকটা বিকল্প খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন।
সেরা সমাধান নির্বাচন
সবগুলো বিকল্প সমাধানের মধ্যে থেকে যেটা সবচেয়ে ভালো, সেটা বেছে নিন।সময় ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব এবং উপায়
কাজের তালিকা তৈরি
To-do list বানালে সময় নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়, কারণ আপনি জানেন কোন কাজটা আগে করতে হবে আর কোনটা পরে করলেও চলবে।
সময়সীমা নির্ধারণ
প্রত্যেকটা কাজের জন্য একটা time limit set করুন। এতে আপনি বুঝতে পারবেন, কোন কাজে কত সময় লাগছে, আর কোথায় improve করার সুযোগ আছে।
বিশ্রাম নেওয়া
কাজের মাঝে বিশ্রাম নেওয়াটা খুব জরুরি। একটানা কাজ করলে productivity কমে যায়। তাই প্রতি ঘন্টায় ৫-১০ মিনিটের জন্য বিশ্রাম নিন।নিজের কাজের প্রতি মনোযোগ ধরে রাখার কৌশল
কাজের পরিবেশ
মনোযোগ ধরে রাখার জন্য কাজের পরিবেশটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। চেষ্টা করুন একটা quiet place-এ কাজ করতে, যেখানে distractions কম।
মাল্টিটাস্কিং পরিহার
মাল্টিটাস্কিং করলে কোনো কাজেই ঠিকমতো মনোযোগ দেওয়া যায় না। একটা একটা করে কাজ শেষ করুন, দেখবেন efficiency বাড়বে।
ছোট বিরতি
কিছুক্ষণ পর পর ছোট break নিলে মন fresh থাকে, আর কাজে মনোযোগ ফিরে আসে।জীবনে ঝুঁকি নেওয়ার গুরুত্ব
সুযোগ কাজে লাগানো
জীবনে বড় কিছু করতে হলে, ঝুঁকি নিতে হয়। সুযোগ সবসময় আসে না, তাই যখন সুযোগ আসে, তখন সেটা কাজে লাগাতে হয়।
ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা
সব ঝুঁকি সফল হবে, এমন কোনো কথা নেই। কিন্তু ব্যর্থতা থেকে অনেক কিছু শেখা যায়, যা ভবিষ্যতে কাজে লাগে।
আত্মবিশ্বাস
ঝুঁকি নিলে নিজের ওপর বিশ্বাস বাড়ে, আর আত্মবিশ্বাস সাফল্যের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে।বর্তমান কর্মজীবনে টিকে থাকার জন্য নতুন দক্ষতা অর্জনের গুরুত্ব অপরিসীম। এই দক্ষতাগুলো অর্জনের মাধ্যমে আপনি কেবল চাকরির বাজারে টিকে থাকতে পারবেন না, বরং সাফল্যের শিখরে পৌঁছাতে পারবেন।
শেষ কথা
আশা করি, এই ব্লগ পোস্টটি আপনাদের কর্মজীবনের জন্য কিছু নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে সাহায্য করবে। মনে রাখবেন, শেখার কোনো শেষ নেই। তাই সবসময় নতুন কিছু শেখার জন্য প্রস্তুত থাকুন। আপনাদের সাফল্য কামনা করি।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
1. নিয়মিত অনলাইন কোর্স করুন।
2. কর্মশালা ও সেমিনারে অংশ নিন।
3. industry expert-দের অনুসরণ করুন।
4. নিজের একটি শক্তিশালী অনলাইন প্রোফাইল তৈরি করুন।
5. soft skills-এর ওপর জোর দিন।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
বর্তমান চাকরির বাজারে টিকে থাকতে হলে নতুন দক্ষতা অর্জন করা জরুরি। নিজের দুর্বলতা চিহ্নিত করে, সময়ের সঠিক ব্যবহার করে এবং সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে যে কেউ কর্মজীবনে উন্নতি করতে পারে।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) 📖
প্র: বিজনেস কোচিং আসলে কী এবং এটা কীভাবে কাজে লাগে?
উ: বিজনেস কোচিং অনেকটা একজন পথপ্রদর্শকের মতো। ধরুন, আপনি একটি নতুন ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছেন, কিন্তু কীভাবে শুরু করবেন বা কোন পথে গেলে দ্রুত সাফল্য পাবেন, তা নিয়ে দ্বিধায় আছেন। একজন বিজনেস কোচ আপনার ব্যবসার দুর্বলতাগুলো খুঁজে বের করতে, একটি সঠিক পরিকল্পনা তৈরি করতে এবং সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে সাহায্য করেন। আমি যখন প্রথম আমার অনলাইন স্টোর শুরু করি, তখন একজন বিজনেস কোচের পরামর্শে আমি আমার মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি পরিবর্তন করি এবং খুব দ্রুত ভালো ফল পাই।
প্র: একজন বিজনেস কোচের যোগ্যতা কী হওয়া উচিত?
উ: একজন ভালো বিজনেস কোচের অনেকগুলো গুণ থাকা দরকার। প্রথমত, তার নিজের সেই বিষয়ে ভালো অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। শুধু ডিগ্রি থাকলেই হবে না, তার বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, তার যোগাযোগ দক্ষতা ভালো হতে হবে, যাতে তিনি আপনার সমস্যাগুলো বুঝতে পারেন এবং সহজ ভাষায় সমাধান দিতে পারেন। তৃতীয়ত, তার ধৈর্যশীল হতে হবে, কারণ ব্যবসার উন্নতি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আমি আমার কোচের কাছে সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটা পেয়েছি, তা হলো তার ইতিবাচক মনোভাব, যা আমাকে কঠিন সময়েও আশা জুগিয়েছে।
প্র: বিজনেস কোচিং কি শুধু বড় কোম্পানির জন্য, নাকি ছোট ব্যবসার মালিকরাও এর সুবিধা নিতে পারেন?
উ: একদমই না! বিজনেস কোচিং ছোট-বড় যেকোনো ব্যবসার জন্যই খুব দরকারি। বরং আমি বলব, ছোট ব্যবসার মালিকদের জন্য এটা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ছোট ব্যবসায় অনেক সময় বাজেট কম থাকে এবং ভুল করার সুযোগ কম থাকে। একজন বিজনেস কোচ ছোট ব্যবসার মালিকদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে, কম খরচে বেশি ফল পেতে এবং দ্রুত উন্নতি করতে সাহায্য করতে পারেন। আমার এক বন্ধুর একটি ছোট রেস্টুরেন্ট ছিল। সে বিজনেস কোচের পরামর্শ নিয়ে মেনু পরিবর্তন করে এবং অনলাইনে প্রচারের মাধ্যমে তার বিক্রি অনেক বাড়িয়েছিল।
📚 তথ্যসূত্র
Wikipedia Encyclopedia




